১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত সিপাহী বিদ্রোহ ছিল ইংরেজদের প্রতি ভারতীয়দের ক্ষোভ ও অসন্তোষ -এর চূড়ান্ত এক পরিণাম। এই বিদ্রোহে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ ছাড়াও কয়েকটি সামরিক কারণ লক্ষ্য করা যায়। সেগুলি নিচে আলোচনা করা হল -- ꘡
সামরিক কারণ :
১. স্বল্প বেতন - ভারতীয় সিপাহীদের বেতন অত্যন্ত কম ছিল। সিপাহিদের আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধাও কম ছিল। এদের পদোন্নতির সুযোগ সুবিধা ছিল না বললেই চলে। এই প্রসঙ্গে ইংরেজ ঐতিহাসিক হোমস্ লিখেছেন, "একজন সিপাহী হায়দার আলীর মতো নৈপুণ্য দেখিয়েও একজন সাধারণ ইংরেজ সৈনিক-এর সমান মর্যাদা আশা করতে পারত না।
২. ভাতা প্রদান নিষিদ্ধ - লর্ড ডালহৌসি ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে "General Service Enlistment Act" দ্বারা ভারতীয় সিপাহিদের যেকোনো স্থানে যুদ্ধে যাওয়া বাধ্যতামূলক করেন। কিন্তু দূর দেশে যুদ্ধে গেলেও সিপাহীরা তাদের প্রাপ্য ভাতা পেতেন না। লর্ড ডালহৌসি ভারতীয় সিপাহিদের জন্য এই ভাতা প্রদান নিষিদ্ধ করে দেয়।
৩. অমানবিক আচরণ - ইংরেজ অফিসাররা ভারতীয় সিপাহীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ এবং খারাপ ব্যবহার করত। হিন্দু সিপাহীদের তিলক কাটা ও মুসলমান সিপাহিদের দাড়ি রাখার উপর ইংরেজ সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ইংরেজ সামরিক কর্মচারীরা ভারতীয় সিপাহিদের ঘৃণার চোখে দেখত। সমসাময়িক একজন ইংরেজ লিখেছেন, "এদেশীয় সিপাহী ও ইংরেজ উচ্চসামরিক কর্মীদের মধ্যে কোনো বন্ধুত্ব বা সহমর্মিতা বোধ ছিল না। উভয়ই ছিল বিচ্ছিন্ন। সিপাহিদের নিকৃষ্ট জীব হিসেবে গণ্য করা হতো। কারণে-অকারণে ইংরেজ কর্মচারীরা সিপাহিদের শুয়োর নিগার ইত্যাদি অশ্লীল ভাষায় সম্মোধন করত"।
equiz4u
0 Comments