গান্ধিজীর খেদা আন্দোলন সম্পর্কে লেখ ꘡ Kheda Satyagraha ꘡ equiz4u


প্রশ্ন ঃ
গান্ধিজীর খেদা আন্দোলন সম্পর্কে লেখ। 
উত্তর ঃ 
           গান্ধিজীর খেদা আন্দোলন ঃ গুজরাটের খেদা বা খেড়া জেলায় ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে দুর্ভিক্ষ ও প্লেগের কারণে খাদ্য উৎপাদন বিশেষভাবে ব্যাহত হয়েছিল। ফসল না জন্মানোর জন্য কৃষকদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়ে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম প্রচণ্ড পরিমাণে বেড়ে যায়। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে, ঐ অঞ্চলের কৃষকরা সরকারের কাছে খাজনা কমানোর আবেদন জানায়। কিন্তু তাসত্ত্বেও সরকার কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য বিভিন্নভাবে তাদের ওপর অত্যাচার শুরু করে। গান্ধিজী সরকারের এরূপ আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে কৃষকদের খাজনা বয়কট করার আবেদন জানায়। ঐ অঞ্চলের কৃষকরা যেন ন্যায্য অধিকার ও দাবিতে অনড় থাকে তার জন্য গান্ধিজী কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। বল্লভভাই প্যাটেল, ইন্দুলাল প্রমুখ সত্যাগ্রহীদের সহযোগিতায় গান্ধিজী খেদা সত্যাগ্রহের ডাক দেয়। এই আন্দোলন ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ২১ মার্চ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত চলে। কৃষকরা সরকারের শাস্তির ভয়কে উপেক্ষা করে এই আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সরকার একটা বোঝাপড়ায় আসতে বাধ্য হয়। 

          আন্দোলনের তাৎপর্য ঃ গান্ধিজী পরিচালিত গুজরাটের খেদায় কৃষক আন্দোলন বিশেষ সাফল্য অর্জন করতে না পারলেও এর তাৎপর্য ছিল সুদূরপ্রসারী। এর কারন, এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গুজরাটে কৃষক সচেতনতার প্রথম প্রকাশ ঘটে। এই আন্দোলন একটি আঞ্চলিক আন্দোলন হলেও এর মধ্যে দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম এক নতুন চরিত্র লাভ করে। শান্ত, নিরীহ গ্রামবাসীদের পক্ষে কেবল আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে সত্যাগ্রহ ও গণআন্দোলনের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব, এই আন্দোলের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের কাছে সেই কথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। 

          এছাড়া গান্ধিজী খেদা সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মানুষদের সাথে অশিক্ষিত মানুষদের এক যোগসূত্র স্থাপনে সক্ষম হয়েছিলেন। সত্যাগ্রহ আন্দোলনের কার্যকারিতা তাই খেদা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। 

equiz4u

আরও জানুন ঃ

১. গান্ধিজীর সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আলোচনা করো।
৩. অছি ব্যবস্থা সম্পর্কে গান্ধিজির ধারণা ব্যাখ্যা করো।

Post a Comment

0 Comments