B.A 5th semester DSE political science short question - equiz4u



 ১. গান্ধিজী ভারতীয় জনসমাজের সাথে কীভাবে  নারী সমাজের সমস্যাকে একীভূত করেছেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজী মনে করেন যে, ভারতীয় জনসমাজ দারিদ্র, শোষণ, বঞ্চনা ইত্যাদি নানান সমস্যার দ্বারা জর্জরিত হয়ে আছে। যার মধ্যে ভারতীয় নারীদের অবস্থা আরও ভীষণভাবে শোচনীয়। নারীরা জন্মগতভাবে শোষিত, নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার।


২. গান্ধিজী নারীদের পুরুষের সাথে তুলনা করে কীরুপ মর্যাদার কথা বলেছেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজী মনে করেন যে, নারীরা পুরুষের অধীনে আছে একথা মনে করা যেমন অন্যায়, তেমনই নারীরা পুরুষের নিচের স্থানে অবস্থান করে, এমন ভাবারও কোন প্রয়োজন নেই। গান্ধিজী উন্নত দেশের চিন্তাভাবনা অনুসারে বলেন যে, একই বস্তু বা একই জিনিসের দুটি সমান ভাগ হল নারী এবং পুরুষ। কাজেই জন্মগতভাবে নারীদের স্বাতন্ত্রতা ও মর্যাদা পুরুষের সমান, তার থেকে কোন অংশেই কম নয়।


৩. গান্ধিজী কি নারী ও পুরুষকে আলাদাভাবে দেখেছিলেন- নিজের মতামত ব্যক্ত করো।

উত্তর ঃ গান্ধিজী নারী ও পুরুষকে আলাদাভাবে দেখেননি। বরং লিঙ্গভেদে নারী ও পুরুষকে যেভাবে আলাদা করা হয়, তিনি সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে সামাজিক কুসংস্কার বলেছেন। তিনি 'ইয়ং ইন্ডিয়া' ও 'হরিজন' পত্রিকায় বিভিন্নভাবে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার ও সমমর্যাদার পক্ষে সওয়াল করেছেন। গান্ধিজী সর্বদাই নারী ও পুরুষকে সমপর্যায়ের বলে অভিহিত করেছেন।


৪. এমন দুটি উল্লেখযোগ্য স্থানের নাম লেখ যেখানকার মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ওপর গান্ধিজী জোর দিয়েছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজী বিভিন্ন স্থানের মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ওপর বিশেষভাবে নজর দিয়েছিলেন। এরকম দুটি স্থান হল- (ক) সবরমতী  (খ) সেবাগ্রাম। 


৫. নারীদের অধিকারের ব্যাপারে গান্ধিজীর চিন্তাধারা কীরুপ ছিল তা লেখ।

উত্তর ঃ গান্ধিজী নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ভীষণভাবে অনমনীয় মনোভাব পোষণ করতেন। এ ব্যাপারে তিনি ছিলেন সমঝোতা বিরোধী। গান্ধিজী মনে করতেন পুরুষরা তাদের স্বার্থে বিভিন্ন সামাজিক অন্তরায় সৃষ্টি করছে এবং নারীর ওপর তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। নারীর ওপর পুরুষের এরূপ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা একদিকে যেমন পৌরুষের অবমাননা করা, ঠিক তেমনই অপরদিকে তা মূর্খতার পরিচয়।


৬. নারীদের স্বাবলম্বী করার ব্যাপারে গান্ধিজী কোন কোন ব্যবস্থা গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজী সর্বদাই চেয়েছিলেন যে নারীরা যেন কখোনই পুরুষের মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকে। নারীরা যেন স্বাবলম্বী হতে পারে তার জন্য তিনি বিশেষ জোর দিয়েছিলেন। তিনি সবসময়ই এব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন যেন নারীরা তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে। এর জন্য তিনি নারীদের চরকা কাটা ও কাটুনির কাজ ইত্যাদির কথা বলেছিলেন। 


৭. পর্দাপ্রথার বিরুদ্ধে গান্ধিজী কীরুপ বক্তব্য রেখেছিলেন?

উত্তর ঃ পর্দাপ্রথার বিরুদ্ধে গান্ধীজী 'ইয়ং ইন্ডিয়া'-তে মহিলাদের উদ্দেশ্যে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন। তিনি সরাসরি বলেন যে, মহিলাদের সতীত্বরক্ষার ব্যাপারে পর্দানিশন হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। 


৮. গান্ধিজী কীভাবে পণপ্রথাকে আক্রমণ করেছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজী সবসময়ই পণপ্রথার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এব্যাপারে তিনি 'হরিজন' ও 'ইয়ং ইন্ডিয়া'-তে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর আবেদন রেখেছেন। পণপ্রথাকে গান্ধীজী সামাজিক কুসংস্কার বলে অভিহিত করেছেন। বিবাহযোগ্য তরুণ এবং তার অভিভাবকদের কাছে তিনি পণপ্রথার মত সামাজিক কুপ্রথাকে উচ্ছেদ করার মানসিকতা তৈরি করতে বলেছেন।


৯. যুদ্ধ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গান্ধিজি কী মন্তব্য করেছেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজি মনে করেন যে, যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সবার আগে যুদ্ধের কারণগুলিকে ভালোভাবে বোঝা দরকার। তিনি বলেন যে, বর্তমানে দুনিয়ায় যা চলছে তা হল হিংসার অভিষেক এবং অহিংসার নীতিকে অস্বীকার করা। যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করে এক দেশ আর এক দেশকে পরাজিত করার এক উন্মত্ত প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। এসবের মধ্যে গান্ধিজির বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের জয় হবেই। কারন সাধারণ জনগণ মনে করবে সরকারে তাদেরও ভূমিকা রয়েছে। 


১০. নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের প্রবক্তা কে?

উত্তর ঃ নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের প্রবক্তা হলেন মহাত্মা গান্ধী।


১১. গান্ধিজি কোন কোন বিদেশী দার্শনিক ও তাদের লেখা গ্রন্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজি যেসব বিদেশি দার্শনিক ও তাদের লেখা গ্রন্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন তারা হলেন -

               ১ রুশ লেখক লিও টলস্টয় ও তাঁর লেখা গ্রন্থ 'The kingdom of God is within you'.

               ২ ব্রিটিশ লেখক জন রাস্কিন ও তাঁর লেখা গ্রন্থ 'Unto this last'.

               ৩ হেনরি ডেভিড থোরো ও তাঁর লেখা গ্রন্থ 'Civil Disobedience'.


১২. দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধিজি কোন কোন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? গান্ধিজি সবরমতী আশ্রম কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকায় টলস্টয় ফার্ম এবং ফিনিক্স স্কুল নামে দুটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।গান্ধিজি ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে সবরমতী আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।


১৩. সত্যাগ্রহ এবং নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের মধ্যে মূল পার্থক্য কোনটি?

উত্তর ঃ সত্যাগ্রহ এবং নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের মধ্যে মূল পার্থক্যটি হল - সত্যাগ্রহ হল এক চূড়ান্ত নৈতিক শক্তি, যা আত্মার শক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

          অপরদিকে, স্বার্থ আদায় করার জন্য রাজনৈতিক অস্ত্র হল নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধ।


১৪. অহিংসা নীতির দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উত্তর ঃ গান্ধিজির অহিংসা নীতির দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল- 

(ক) আবেদনের মাধ্যম ঃ মানুষ তাঁর সুকুমার বৃত্তিগুলি এবং বিবেকের কাছে অহিংসা নীতির দ্বারাই আবেদন জানায়।

(খ) সভ্য মানুষের হাতিয়ার ঃ সভ্য মানুষের হাতিয়ার হল অহিংসা, যা আত্মিক শক্তির অভিব্যক্তি।


১৫. অছি ব্যবস্থা কাকে বলে?

উত্তর ঃ গান্ধিজির মতে, সমাজের সকল ধনবান ব্যক্তি যদি তাদের ধনসম্পদের মালিকানা দ্বারা এক সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে এবং তার মধ্যে দিয়ে আড়ম্বরহীন, সুখী জীবনযাপন করে, তাহলে সমাজের মঙ্গল হবে এবং তার সুষম উন্নতি ঘটবে। সকল ব্যক্তির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সমাজের সামাজিক মালিকানাকে বলা হয় 'অছি' ব্যবস্থা।

equiz4u

১৬. গান্ধিজি ভারতে প্রথম কবে এবং কোথায় তাঁর সত্যাগ্রহের পরীক্ষা করেছিলেন?

উত্তর ঃ ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বিহারের চম্পারনে 'তিন কাঠিয়া' ব্যবস্থার মাধ্যমে নীল চাষিদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে গান্ধিজি প্রথম সত্যাগ্রহের পরীক্ষা শুরু করেন।


১৭. রাওলাট সত্যাগ্রহ কী?

উত্তর ঃ ১৯১৯ সালের এপ্রিল মাসে গান্ধিজির নেতৃত্বে দমনমূলক রাওলাট আইনের প্রতিবাদে সারাভারতে যে সত্যাগ্রহ আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল তা রাওলাট সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত। এর সূচনা ৬ এপ্রিল এবং ১৮ এপ্রিল গান্ধিজি এই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।


১৮. রাওলাট সত্যাগ্রহের সময় কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল?

উত্তর ঃ ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল রাওলাট সত্যাগ্রহের সময় পাঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ান ওয়ালাবাগে সমবেত দশ হাজার নিরস্ত্র মানুষের ওপর জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে ব্রিটিশ সরকারের সামরিক বাহিনী গুলিবর্ষণ করে, যা জালিয়ান ওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত।


১৯. গান্ধিজির রাষ্ট্রচিন্তার মূলভিত্তিগুলি আলোচনা করো।

উত্তর ঃ গান্ধিজির রাষ্ট্রচিন্তার মূলভিত্তিগুলি ছিল -

          (১) অহিংস নীতি ঃ গান্ধিজি অহিংস নীতির ওপর সম্পূর্ণভাবে আস্থাশীল ছিলেন। সকলের ভালোবাসার ওপরও তিনি আস্থা রাখতেন।

          (২) ব্যক্তির নৈতিক স্বাধীনতা ঃ গান্ধিজির কোন ব্যক্তির নৈতিক স্বাধীনতার ওপর গভীর বিশ্বাস ছিল।

          (৩) সর্বোদয় ঃ সর্বোদয়ের ওপর অর্থাৎ সকলের কল্যাণ সাধনের ওপরও গান্ধিজির অগাধ আস্থা ছিল।


২০. গান্ধিজির রাষ্ট্র চিন্তার দুটি সীমাবদ্ধতা লেখ।

উত্তর ঃ গান্ধিজির রাষ্ট্রচিন্তা বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে। যেমন-

          (১) শ্রেণিগত বিষয় উপেক্ষিত ঃ সমালোচকদের মতে গান্ধিজি রাষ্ট্রকে হিংসা এবং বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হিসাবে গণ্য করলেও শ্রেণিগত বিষয়টিকে তিনি এখানে উপেক্ষা করেছেন।

          (২) নৈতিকতায় অতিরিক্ত গুরুত্বদান ঃ কিছু সমালোচক মনে করেন যে, গান্ধিজি নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের ভিত্তি গড়তে চেয়েছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র কখনোই কেবল নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে না। তাই এক্ষেত্রে গান্ধিজির তত্ত্ব অবাস্তব তত্ত্বে পরিণত হয়েছে।


২১. গান্ধিজি প্রবর্তিত রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে লেখ।

উত্তর ঃ গান্ধিজি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরোধিতা করেছেন। কারন তিনি মনে করতেন, হিংসা এবং বলপ্রয়োগের ওপর নির্ভর করে আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। তাঁর মতে স্বল্প শাসন প্রয়োগকারী রাষ্ট্র একান্ত কাম্য। কারন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথে রাষ্ট্র বাঁধার সৃষ্টি করে। উপরন্তু, ব্যক্তির লক্ষ্যপূরণে রাষ্ট্র মাঝে মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই গান্ধিজি রাষ্ট্রহীন এক রামরাজ্যের কথা ভেবেছিলেন।


২২. কোন কোন পত্রিকায় গান্ধিজির চিন্তা ভাবনার প্রকাশ ঘটেছিল?

উত্তর ঃ 'হিন্দ স্বরাজ', 'হরিজন', 'ইয়ং ইন্ডিয়া' প্রভৃতি পত্রিকায় গান্ধিজির চিন্তা ভাবনার প্রকাশ ঘটেছিল।


২৩. কেন গান্ধীজীকে নৈরাজ্যবাদী বলা হয়ে থাকে?

উত্তর ঃ গান্ধিজি রাষ্ট্রহীন সমাজ চেয়েছিলে, যেখানে হিংসা নামক কোন জিনিস থাকবে না। তাঁর মতে রাষ্ট্র হল এক বলপ্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। তিনি রাষ্ট্রহীন সমাজের কামনা করেছিলেন বলেই তাঁকে নৈরাজ্যবাদী বলা হয়। কিন্তু, ফিলিপ স্প্রাট, পল পাওয়ার প্রমুখ গান্ধীজীকে কখনোই নৈরাজ্যবাদী বলে মনে করেন না। অপরদিকে, গোপীনাথ ধাওয়ান, ড. বিনয় সরকার প্রমুখ মনে করেন, গান্ধিজির বক্তব্যের সাথে টলস্টয়ের নৈরাজ্যবাদের মিল পাওয়া যায়। ড. বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতে গান্ধিজির চিন্তায় আদর্শবাদী ও বাস্তববাদী দুটি সত্ত্বাই ছিল এবং এই দুইয়ের মধ্যে বিস্তর ব্যবধানও ছিল।


২৪. কেন গান্ধিজি রাষ্ট্রের প্রতি বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজি মনে করতেন, রাষ্ট্র শুধু তার কেন্দ্রীয় শক্তিকেই বৃদ্ধি করে এবং হিংসার প্রয়োগ করে ব্যক্তির বিকাশের পথে বাধা দেয় এবং নানা ছলনায় ব্যক্তিত্বকে ধ্বংস করে শোষণ অব্যাহত রাখে। তাছাড়া মানুষের সার্বভৌমত্বে গান্ধিজির প্রবল আস্থা ছিল। তিনি রাষ্ট্রের আইনগত সার্বভৌমত্বে গুরুত্ব দেননি। কারন আইনগত সার্বভৌমত্ব ব্যক্তির বিকাশের পথে অন্তরায়। এইসব কারণে গান্ধিজি রাষ্ট্রের প্রতি বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন।


২৫. গান্ধিজি কেন পশ্চিমি গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছিলেন? 

উত্তর ঃ গান্ধিজি মনে করেন, পশ্চিমি গণতন্ত্র জনগণের কল্যাণের নামে মানুষের ওপর নিপীড়ন চালায়। এই গণতন্ত্রে সামান্য সংখ্যক পুজিতান্ত্রিক ব্যক্তি আপামর দুর্বল মানুষের ওপর শোষণ চালিয়ে তাঁদের পুঁজি বাড়াতে থাকে। তাই তিনি পশ্চিমি বা ইউরোপীয় গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছেন। 


২৬. টলস্টয়ের লেখা এমন দুটি গ্রন্থের নাম লেখ যা গান্ধিজির চিন্তায় প্রভাব ফেলেছিল?

উত্তর ঃ টলস্টয়ের লেখা যে দুটি গ্রন্থ গান্ধিজির চিন্তায় প্রভাব ফেলেছিল তা হল-

                    (i) The Kingdom of God within you.

                    (ii) The slavery of our times.


 ২৭. আক্ষরিক অর্থে সত্যাগ্রহ কী?

উত্তর ঃ 'সত্য' ও 'আগ্রহ' - এই দুটি সংস্কৃত শব্দের সমন্বয়ে 'সত্যাগ্রহ' শব্দটি গড়ে উঠেছে। আক্ষরিক অর্থে 'সত্যাগ্রহ'-এর অর্থ হল- সত্যের জন্য উপবাস বা তপস্যা, সত্যকে ধরে রাখার জন্য অক্লান্ত প্রয়াস বা সত্যের জন্য মানসিক দৃঢ়তা প্রভৃতি।


২৮. গান্ধিজি বর্ণিত সত্যাগ্রহের বিভিন্ন রূপগুলি লেখ।

উত্তর ঃ গান্ধিজি সত্যাগ্রহের পাঁচটি রুপের কথা বলেছেন। এগুলি হল- (ক) অসহযোগ আন্দোলন  (খ) আইন অমান্য আন্দোলন  (গ) হিংসাকে অগ্রাহ্য করা  (ঘ) স্ব-আরোপিত নিগ্রহ  (ঙ) উপবাস বা অনশন।


২৯. একজন সত্যাগ্রহীর কোন কোন গুণ থাকা প্রয়োজন বলে গান্ধিজি মনে করেছেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজি মনে করেন সত্যাগ্রহীর কতগুলি গুণ থাকা আবশ্যক। যেগুলি হল- আত্মশক্তি, সততা, কষ্টসহিষ্ণুতা, নির্ভীকতা, বিনয়, আত্মসংযম, অন্যের প্রতি আন্তরিকতা, ধৈর্য, ধনসম্পত্তিতে অনাসক্তি, ঈশ্বরে বিশ্বাস প্রভৃতি। 


৩০. গান্ধিজির সত্যাগ্রহীর পর্যায়গুলি উল্লেখ করো।

উত্তর ঃ গান্ধিজির সত্যাগ্রহীর পর্যায়গুলি হল- 

                    (i) দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের সত্যাগ্রহ আন্দোলন।

                    (ii) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের বিহার রাজ্যের অন্তর্গত চম্পারনে নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে নীল চাষিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য চম্পারন সত্যাগ্রহ। 

                    (iii) গুজরাটের দুর্দশাগ্রস্থ কৃষকদের খাজনা রদের দাবিতে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে খেদা সত্যাগ্রহ আন্দোলন।

                    (iv) আমেদাবাদের কাপড়ের কলের শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে আমেদাবাদ সত্যাগ্রহ আন্দোলন।

                    (v) রাওলাট আইনের প্রতিবাদে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে রাওলাট সত্যাগ্রহ।

                    (vi) ব্রিটিশ সরকারের লবণ আইন ভঙ্গ করতে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে লবণ সত্যাগ্রহ। 


৩১. সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য গান্ধিজি কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন?

উত্তর ঃ গান্ধিজি সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য অহিংস পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন। এই পদ্ধতির বিভিন্ন প্রকারগুলি হল- (i) অসহযোগ আন্দোলন  (ii) আইন অমান্য আন্দোলন  (iiii) বিক্ষোভ আন্দোলন  (iv) কর না দেওয়া  (v) অনশন  (vi) ধর্মঘট  (vii) চরমপত্র প্রদান  (viii) বিপক্ষের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা প্রভৃতি। 


৩২. গান্ধিজির 'গণ-আইন-অমান্য' আন্দোলনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর ঃ গান্ধিজির নেতৃত্বে পরিচালিত 'গণ-আইন-অমান্য' আন্দোলনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-

                    (i) অহিংস নীতি ঃ  'গণ-আইন-অমান্য' আন্দোলন ছিল সত্য ও অহিংস নীতির পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বিতীয় পদক্ষেপ। তবে এক্ষেত্রে অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনের সমন্বয় ঘটেছিল।

                    (ii) গান্ধিজির 'গণ-আইন-অমান্য' আন্দোলনের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হল এই আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। 

Post a Comment

0 Comments